ভালো ফটোগ্রাফার হবার জন্য অনেক কিছু প্রয়োজন।
প্রথম যে জিনিসটা প্রয়োজন সেটা হলো ভালো একটা
ক্যামেরা। তবে এটি যে খুবই দামী ডিএসএলআর ক্যামেরা
হতে হবে এমন কোন কথা নেই। এরপর প্রয়োজন হবে
ক্যামেরা ও ফটোগ্রাফি সম্পর্কে তাত্ত্বিক জ্ঞান ও
অভিজ্ঞতা এবং সেই সাথে সৃষ্টিশীল দৃষ্টিভঙ্গি।
রাতারাতি ভালো ফটোগ্রাফার হওয়া যায় না। তাই
সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ধৈর্য্য, চেষ্টা ও আগ্রহ।
শৌখিন বা পেশাগত সব ফটোগ্রাফারদের কাজে আসবে
এমন ১২০টি টিপস এখানে দেওয়া হল।
1. নতুন ক্যামেরার প্যাকেঁটি এমনভাবে খুলুন যাতে
ক্যামেরাটি আবার রিপ্যাক করা যায় এবং
প্যাকেটি যত্ন করে রেখে দিন। নতুন ক্যামেরা
প্রথমদিকে অতি যত্নের সাথে ব্যাবহার করুন যেন
কোন স্পট না পড়ে। কারণ কোন সমস্যা হলে
ক্যামেরাটি তখন প্যাকেটসহ ফেরত দিতে পারবেন।
2. নতুন ক্যামেরায় প্রথমবারের সেটিংগুলো, যেমন:
ব্যাটারি ফুলচার্জ, মেমোরি কার্ড ইনস্টল, তারিখ
ও সময়, ভাষা নির্বাচন ইত্যাদি ইউজার গাইড
দেখে সঠিকভাবে করুন।
3. আপনার ক্যামেরাকে ভালোভাবে জানতে ও
বোঝতে হলে ম্যানুয়েলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত
একাধিকবার পড়ুন।
4. ক্যামেরার কোন বাটন বা অপশন না বোঝলে
আন্দাজে পরীক্ষা-নিরিক্ষা না করে ম্যানুয়েল
দেখে জেনে নিন।
5. শুরু থেকেই সঠিকভাবে ক্যামেরা ধরার অভ্যাস
করুন । দক্ষ ফটোগ্রাফার হিসেবে ভালো ছবি
তোলার জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
6. ক্যামেরার জন্য মজবুত ও টেকশই একটি ব্যাগ
কিনুন। ব্যাগটি এমন হওয়া উচিত যাতে এর মধ্যে
ক্যামেরার আনুষাঙ্গিক জিনিসপত্র রাখা যায়
এবং বাইরের চাপ, আঘাত ও বৃষ্টি থেকে
ক্যামেরাকে রক্ষা করে।
7. ক্যামেরা লেন্সের ব্যাগে সিলিকা জেলের একটা
প্যাকেট রাখুন, তাতে ক্যামেরা ও লেন্সে ফাঙ্গাস
আসার সম্ভাবনা থাকবে না।
8. এমন ক্যামেরা না কেনাই ভালো যার ব্যাটারি ও
মেমোরি কার্ড সহজে পাওয়া যায় না। সম্ভব হলে
অতিরিক্ত একটি ব্যাটারি প্রথম দিকেই কিনে
রাখুন। কারণ মডেল পুরানো হয়ে গেলে তখন আর
ব্যাটারি পাওয়া যায় না।
9. ক্যামেরা নিয়ে বাইরে যাওয়ার আগে ব্যাটারির
চার্জ ও মেমোরি স্পেস চেক করুন এবং ক্যামেরা
সংক্রান্ত আনুষাঙ্গিক জিনিসপত্র সাথে আছে
কিনা দেখে নিন।
10. এসি রুম থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে ক্যামেরা
বের করবেন না বা খুলবেন না। কারণ এতে
ল্যান্সে কনডেন্স আসতে পারে।
11. ক্যামেরা নিয়ে বের হওয়ার সময় যে কোন
প্রতিকূল আবহাওয়া ও অবস্থার প্রস্তুতি নিয়ে
বের হউন।
12. খুব ঠান্ডা ও গরম জায়গায় ক্যামেরা রাখবেন না।
এমনকি সরাসরি সূর্যের আলো ও কোন
ইলেকট্রনিক ডিভাইসের পাশেও ক্যামেরা রাখা
উচিত নয়।
13. আপনার ক্যামেরার বিভিন্ন অপশন ও ফিচারের
চিহ্ন ও সংকেতগুলো শুরুতেই ম্যানুয়েল দেখে
জেনে নিন।
14. হালকা কমপ্যাক্ট ক্যামেরায় ছবি তুলতে শাটার
বাটন চাপ দেওয়ার সময় শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ
রাখুন, কারন সেসময় ক্যামেরা কাঁপার সম্ভাবনা
বেশি।
15. নতুন কোন দেশ বা শহরে গেলে প্রথমে ভিউ
কার্ডের স্থানীয় দোকান ভিজিট করুন। ছবি
তোলার কিছু আইডিয়া পেয়েও যেতে পারেন।
16. বিশেষ করে এসএলআর ক্যামেরায় লেন্স খোলার
পর ক্যামেরা মাউন্ট হাত বা কিছু দিয়ে ঢেকে
রাখুন, যাতে এর মধ্য দিয়ে ধুলোবালি বা সূর্যের
আলো ঢুকতে না পারে।
17. আপনার ক্যামেরার ডিসপ্লের উপর পুরোপুরি
নির্ভর করবেন না। কারণ ছবির বাস্তব উজ্জলতা
ও কালার কোয়ালিটি ডিসপ্লেতে প্রদর্শিত হয়
না।
18. ক্যামেরা ধরার সময় বাহু শরীরের সাথে লাগিয়ে
রাখুন অথবা আশেপাশে কোন সাপোর্ট থাকলে
তার সাথে হাত লাগিয়ে শট নিন।
19. ম্যানুয়েল ফ্লাশ কেনার সময় ক্যামেরার সাথে
ফ্লাশটি খাপ খায় কিনা জেনে নিন। এমন ধরনের
ফ্লাশ কিনবেন না যার লাইটটিকে আপ-ডাইন করা
বা চারপাশে ঘুরানো যায় না। ক্যামেরা ও ফ্লাশের
জন্য সম্ভব হলে এক্সট্রা ব্যাটারি রাখুন।
20. মেমোরিকে সম্পূর্ণ খালি করে আবার ব্যবহারের
আগে ফরমেট করুন। একটি বড় সাইজের পরিবর্তে
দুইটি মাঝারি সাইজের মেমোরি ব্যবহার করুন।
21. ক্যামেরা ও লেন্স পরিষ্কারের জন্য তুলি, টিস্যু,
ব্লোয়ার ও পরিষ্কার সুতি কাপড় ব্যবহার করুন।
22. আদ্রতাযুক্ত আবহাওয়ায় বিশেষ করে বৃষ্টির দিনে
ক্যামেরা ও লেন্সের বেশি যত্ন নিন। ক্যামেরা
সবসময় শুষ্ক স্থানে রাখুন।
23. ক্যামেরার লেন্স ও এলসিডি ডিসপ্লে স্পর্শ
করবেন না। হাতের ময়লা বিশেষ করে তেল জাতীয়
কিছু লাগলে স্থায়ী দাগ পড়ে যেতে পারে।
24. সমূদ্র সৈকতে লবনাক্ত পরিবেশ, বালি ও আদ্রতা
থেকে রক্ষার জন্য ক্যামেরা বেশিক্ষণ খোলা
রাখবেন না। ছবি তোলার পর ক্যামেরা ব্যাগে
ঢুকিয়ে রাখুন।
25. ক্যামেরার ব্যাগটি মাঝে মাঝে পরিষ্কার করুন।
ব্যাগের মধ্যে বালি বা ময়লা থাকলে ক্যামেরা ও
লেন্সের জন্য ক্ষতি হবে।
26. ছবি তোলার সময় ক্যামেরার স্ট্রেপটি গলায় বা
হাতের মধ্যে ঢুকিয়ে রাখুন। অসাবধানতায়
ক্যামেরাটি হাত থেকে ছুটে গেলেও অন্তত
মাটিতে পড়বে না।
27. যে ব্র্যান্ড ও মডেলের ক্যামেরাটি কেনার
সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা কেনার আগে ইন্টারনেটে
রিভিউ দেখুন। সেখানে অনেক অজানা ও মূল্যবান
তথ্য পেয়ে যেতে পারেন।
28. অতিরিক্ত ঠান্ডা ক্যামেরার এলসিডি ডিসপ্লে ও
ব্যাটারির জন্য ক্ষতিকর।
29. আমরা অনেক সময় নিজের বা নিজেদের ছবি
তোলার জন্য অপরিচিত লোকের হাতে ক্যামেরা
তুলে দিই। দামী ক্যামেরা অপরিচিত লোকের হাতে
দেওয়ার সময় সতর্ক থাকবেন, লোকটি হয়তো
ছিনতাইকারীও হতে পারে।
30. কোন নতুন এলাকায় যাওয়ার আগে সেখানকার
দর্শনীয় স্থান ও ছবি তোলার সুন্দর জায়গা
সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ রাখুন।
31. ছবি তোলার আগে সাবজেক্ট, আলো,
ব্যাকগ্রাউন্ড, ভিউ অফ এঙ্গেল, এক্সপোজ
ইত্যাদি নিয়ে পরিকল্পনা করুন।
32. ছবি তোলার আগে সম্ভব হলে সময় নিয়ে দৃশ্য ও
সাবজেক্টের অনুকূলে ক্যামেরার ফিচার ও
কমপোস সেটিং করুন।
33. সাবজেক্টের ব্যাকগ্রাউন্ড যতটুকু সম্ভব প্লেইন
রাখার চেষ্টা করুন। এর কালার সাবজেক্টের
কালারের চেয়ে যেন উজ্জল না হয়।
34. ব্যাটারি চার্জ ও মেমোরি স্পেস পর্যাপ্ত পরিমাণ
থাকলে ভিউ পয়েন্ট, কমপোস ও এক্সপ্লোজার
সামান্য পরিবর্তন করে একই সাবজেক্টের
একাধিক ছবি তুলুন। পরে সবচেয়ে ভালো ছবিটি
রেখে বাকীগুলো ডিলিট করতে পারবেন।
35. আপনার ক্যামেরার বিভিন্ন ফাংশন ও ফিচার দিয়ে
এক্সপেরিমেন্ট হিসেবে কিছু ছবি তুলে এগুলোর
এফেক্ট জেনে রাখুন। পরবর্তীতে এগুলোর সঠিক
সময়ে সঠিক ব্যবহার করতে পারবেন।
36. ফটোগ্রাফিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে
”আলো”। তাই ছবির দৃশ্যে প্রথমেই আলোর
উৎস, পরিমাণ, প্রতিফলন ইত্যাদি নিয়ে ভাবুন।
37. কৃত্রিম আলোর পরিবর্তে প্রাকৃতিক আলোতে
ছবি তোলার চেষ্টা করুন।
38. আলোর উৎস সাবজেক্টের পিছনে থাকলে ফ্লাশ
ব্যবহার করুন।
39. কমপ্যাক্ট ক্যামেরার বিল্ড-ইন-ফ্লাশ সাধারণত
৫-১০ মিটারের বেশি কভার করে না। আপনার
ক্যামেরার ফ্লাশের ক্ষমতা আগেই পরীক্ষা করে
জেনে নিন।
40. অনেক ক্ষেত্রে একই সাবজেক্টের একটি
Horizontal ও আরেকটি Vretical ছবি থাকলে
ভালো হয়।
41. ছবি তোলার আগে ছবির সাবজেক্ট সম্পর্কে
ভালোভাবে জানুন। প্রাকৃতিক দৃশ্যের ভালো ছবি
তোলতে পারে যে ফটোগ্রাফার তিনি একজন
ভালো Naturalistও বটে।
42. সাবজেক্টকে ফ্রেমে যতটুকু সম্ভব বড় রাখার
চেষ্টা করুন এবং ফ্রেমের মাঝখানে না রেখে ১/৩
অবস্থানে রাখুন।
43. তাড়াহুড়ো না থাকলে সময় নিযে ছবি তুলুন। আগে
দৃশ্য, সাবজেক্ট, আলোর উৎস, কমপোজ,
এক্সপ্লোজার ইত্যাদি নিয়ে ভেবে তারপরে শট
নিন।
44. জীবজন্তু, মানুষ ও শিশুর ক্ষেত্রে যতটুকু সম্ভব
কাছে গিয়ে এবং সাবজেক্টের আই লেভেল বরাবর
ক্যামেরা ধরে ছবি তুলুন।
45. শট নেওয়ার আগে ক্যামেরা সাবজেক্টকে
ঠিকমতো ফোকাস করেছে কিনা দেখে নিন।
46. সবসময় ক্যামেরার অপটিক্যাল জুম ব্যবহার করুন।
ডিজিটাল জুমে ছবির কোয়ালিটি হ্রাস পায়।
47. সচরাচর যেসব এঙ্গেল থেকে ছবি তোলা হয় তার
পরিবর্তে সম্ভব হলে কিছুটা ব্যতিক্রম এঙ্গেল
থেকে ছবি তুলুন।
48. ফটোশপ বা এই জাতীয় কোন ফটো এডিটিং
প্রোগ্রাম যতটুকু সম্ভব শিখে নিন।
49. অপরিচিত কোন লোকের ছবি তোলার আগে
অনুমতি নিন।
50. গতিশীল সাবজেক্টের ছবি তোলার জন্য
প্রয়োজন দ্রুত গতির শাটার স্পীড। কমপ্যাক্টের
চেয়ে এস এল আর ক্যামেরায় এ ধরনের ছবি
ভালো হয়।
51. ছবি তোলতে ক্যামেরার শুট বাটন সম্পূর্ণ চাপ
দেওয়ার পর লেন্সের শাটার ওপেন হয়ে আলো
সেন্সরে এসে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ছবিটিকে
মেমোরিতে সংরক্ষণ করা পর্যন্ত পুরো প্রসেসটি
সম্পন্ন করতে সামান্য কিছু সময় লাগে। এই
সময়কে Shutter lag বলে।
52. কমদামী ও দূর্বল কমপ্যাক্ট ক্যামেরায় Shutter
lag সেকেন্ডের বেশি হতে পারে। তাই এই ধরনের
ক্যামরায় শুট বাটন চাপ দেওয়ার পর কয়েক
সেকেন্ড ক্যামেরা স্থির ভাবে ধরে রাখতে হয়,
অন্যথায় ছবি ঝাপসা হতে পারে।
53. স্লো শাটার স্পীডে ক্যামেরা Tripod-এ রেখে ছবি
তুলুন অথবা স্থির কিছুর উপর ক্যামেরা রেখে
সেলফ টাইমার ব্যবহার করুন।
54. এলসিডি ডিসপ্লের পাশাপাশি যদি ভিউ
ফাইন্ডারও থাকে তবে ছবি তোলার সময়
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভিউ ফাইন্ডার ব্যবহার করুন।
55. এসএলআর ক্যামেরায় লেন্সের মুখে একটি UV
ফিল্টার লাগিয়ে রাখুন। তাতে বাইরের কোন
আঘাত বা ঘর্ষণে লেন্সের ক্ষতি হবে না।
56. প্রয়োজন ছাড়া ক্যামেরা অন করে না রাখলে, ঘন
ঘন ফ্লাশ ব্যবহার না করলে এবং তোলা ছবি
বারবার প্লে করে না দেখলে ব্যাটারির চার্জ কম
খরচ হয়।
57. ফটোগ্রাফির যে কোন টিপস্ ও পরামর্শ পেলে
নোট করে রাখুন। কারণ স্মৃতি প্রতারণা করলেও
লিপি তা করে না।
58. ভোরের ও বিকালের সূর্যের আলোতে সাধারণত
ছবি ভালো হয়।
59. যে স্থানে ছবি তোলবেন সেটি প্রথমে নিজের
চোখ ও হৃদয় দিয়ে অবলোকন করুন, তারপরে
ক্যামেরা দিয়ে দেখুন।
60. সূর্যের আলো লেন্সে পড়ে ছবিতে যে লেন্স
ফেয়ার তৈরি করে তা থেকে রক্ষা পেতে লেন্স হুড
ব্যবহার করুন।
61. সম্ভব হলে ক্যামেরার সর্বোচ্চ কোয়ালিটি ও
মেগাপিক্সেল ব্যবহার করে ছবি তুলুন। প্রয়োজনে
পরে রিসাইজ করতে পারবেন।
62. Exploser সেটিং-এ ISO যত কম রাখা যায় ততই
ভালো, বেশি ISO ছবিতে নয়েজ সৃষ্টি করে।
63. নিজের তোলা ছবির সমালোচনা গ্রহণ করার
অভ্যাস গড়ে তুলুন।
64. পোট্রেইট ছবিতে সাবজেক্টের পোজ, দৃশ্য ও
ব্যাকগ্রাউন্ড এমনভাবে নির্বাচন করুন যাতে যার
ছবি তোলা হবে তার ব্যক্তিত্বও ফুটে উঠে।
65. ফ্লাশ ব্যবহারের আগে সাবজেক্টের কোন
অসুবিধা হবে কিনা জেনে নিন। তাছাড়া অনেক
যাদুঘর ও আর্ট প্রদশর্নীতে ছবি তোলার
অনুমতি থাকলেও ফ্লাশ ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকে।
66. নবজাতকের ছবি তোলার সময় ফ্লাশ ব্যবহার
করবেন না।
67. ফটোগ্রাফ সম্পর্কিত বই, পত্র-পত্রিকা, ব্লগ-
ফোরাম ইত্যাদি চর্চা করুন।
68. ক্যামেরার ম্যানুয়েল মুডে ছবি তোলার চেষ্টা
করুন। তাতে ক্যামেরা ও ছবির উপর আপনার
নিয়ন্ত্রণ থাকবে।
69. ছবিতে আলো ও রংকে উচ্চমাত্রায় নিয়ন্ত্রন
করতে লেন্সে আলাদা ফিল্টার ব্যবহার করুন।
70. আপনার আশেপাশের সুন্দর জায়গাগুলো চিনে
রাখুন। সুযোগ পেলে ভালো আবহাওয়ায় সেখানে
গিয়ে ছবি তুলুন।
71. ফটোসাংবাধিক হিসেবে ছবি তোলার সময় ছবির
শিল্পের চেয়ে তথ্যকে গুরুত্ব দিতে হবে বেশি।
72. ব্যক্তির ছবির ক্ষেত্রে ভালো ছবি উঠলে নিজে
বাহবা না নিয়ে ছবির ব্যক্তিকে প্রশংসা করুন।
73. ছবি তোলার সময় শুধু ক্যামেরাতে চোখ রাখলে
চলবে না। নিজের অবস্থানের আশেপাশেও নজর
রাখুন, যাতে কোন দূর্ঘটনা না ঘটে।
74. যার/যাদের ছবি তোলবেন তার/তাদের সাথে
বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করুন। তাহলে সবাই অপনার
সাথে ছবি তুলতে স্বাছন্দ্য বোধ করবে।
75. কখনও জোর করে কারো ছবি তোলার চেষ্টা
করবেন না।
76. ছবি তোলার জন্য তাড়াহুড়ো করে কোন দৃশ্য
সিলেক্ট না করে আশেপাশে চারিদিকে একটু ঘুরে
দেখুন। হয়তো আরো ভালো দৃশ্য পেয়ে যেতে
পারেন।
77. Histogram বোঝার চেষ্টা করুন, এটি ছবি
সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করে।
78. ছোট সাবজেক্টের ছবি তোলার সময় খুব কাছে
গিয়ে সর্বোচ্চ জুমিং করে ফোকাস করুন। এধরনের
ছবির জন্য অনেক ক্যামেরায় ম্যাক্র জুম অপশন
থাকে।
79. আপনার ছবি সম্পর্কে অন্যেরা কি বলবে তা
নিয়ে ভাববেন না। আপনি যদি নিজে পছন্দ করেন
তাহলে তা মিডিয়ায় প্রকাশ করুন।
80. যে ধরনের দৃশ্য আপনি পছন্দ করেন এবং যেসব
সাবজেক্টে আপনার উৎসাহ বেশি সে ধরনের ছবি
বেশি তুলুন।
81. সম্ভব হলে সবসময় Tripod ব্যাবহার করুন, এতে
অনেক কঠিন ছবি তোলা সহজ হয়।
82. সাবজেক্টের আচার-আচরণ ও লাইফস্টাইল
পর্যবেক্ষন করুন। তাহলে আগেই বোঝতে পারবেন
ছবি তোলার সঠিক মুহুর্তটি কখন আসবে।
83. সাবজেক্টকে সেন্টারের বাইরে রেখে ফোকাস
করতে অসুবিধা হলে আগে ফোকাস করে তারপর
সেন্টার থেকে সরিয়ে শ্যুট করুন।
84. খেলাধুলার বিশেষ মুহুর্ত এবং শিশুদের ক্রিয়া-
প্রতিক্রিয়ার বিশেষ মুহুর্তগুলোর ছবি তোলতে
আবহেলা করবেন না। কারণ এধরনের মুহুর্ত আর
নাও আসতে পারে।
85. সূর্যোদয়ের পরে এক ঘন্টা ও সূর্যাস্তের আগে
এক ঘন্টা ছবি তোলার সবচেয়ে ভালো সময়ে।
ফটোগ্রাফির ভাষায় এই সময়কে magic hour বলা
হয়।
86. পোট্রেট ছবি তোলার সময় সাবজেক্টকে relux
করার জন্য হাস্যরসাত্মক কথাবার্তা বা
গানবাজনা ব্যবহার করা যেতে পারে।
87. ভ্রমনের সময় এমনভাবে ছবি তুলুন যেন স্থানীয়
লোকের লাইফস্টাইল, সংস্কৃতি এবং অন্যান্য
স্থানীয় তথ্য ফুটে উঠে।
88. দৃশ্যে দিগন্তরেখা, দীর্ঘ সৈকত, উপকূল, দীর্ঘ
সোজা রাস্তা ইত্যাদি থাকলে সেগুলোকে ছবির
কোন পাশে রাখলে ভালো দেখাবে তা নিয়ে
ভাবতে হবে।
89. ফ্লাশের আলোকে সরাসরি সাবজেক্টের ওপরে না
ফেলে আশেপাশের দেয়ালে বা ছাদে বাউন্স করে
ফেললে ছবি ভালো হয়।
90. যেখানে আলো কম সেখানে ISO বাড়িয়ে ছবি
তুলুন।
91. গতিশীল সাবজেক্টের ছবিতে সাবজেক্টের আগে
ও পিছে কিছু খালি জায়গা রাখুন।
92. গতিশীল সাবজেক্টের ছবি তোলার ক্ষেত্রে
সাবজেক্ট যেসব স্থানে আসবে তার যে কোন
একটি স্থানের ফোকাস ক্যামেরাতে রেডি করে
রাখুন। সাবজেক্ট সে জায়গায় আসা মাত্রই শট
নিন।
93. ’ডেফথ অফ ফিল্ড’ কমিয়ে সাবজেক্টকে ফোকাস
করে ব্যাকগ্রাউন্ডকে ব্লার করা যায়।
94. সূর্যাস্ত বা দূরের কোর প্রাকৃাতক দৃশ্যের ছবি
নেওয়ার সময় ফোরগ্রাউন্ড (দৃশ্য ও ক্যামেরার
মধ্যবর্তী স্থান) খালি না রেখে প্রাকৃাতিক কিছু
রাখুন – ছবিটি ত্রিমাত্রিক এফেক্ট পাবে।
95. কোন সাবজেক্টের বিশালতা বা ক্ষুদ্রতা
প্রকাশের জন্য ছবিতে সাবজেক্টের আশেপাশে
এমন কিছু রাখুন যাতে দর্শক বোঝতে পারে
সাবজেক্টটি কত বড় বা ছোট।
96. প্রাকৃতিক দৃশ্যের ছবি প্যানারমিক হলে সুন্দর
দেখায়। আপনার ক্যামেরাতে সীনমুডে Panaromic
অপশন থাকলে তা ব্যবহার করুন। বড় সাইজের
ছবি তোলে পরে ক্রোপ করেও প্যানারমিক করা
যায়।
97. যার ছবি তোলা হবে তাকে যে সবসময় ক্যামেরার
দিকে তাকাতে হবে এমন কোন বাঁধাধরা নিয়ম নেই।
সাবজেক্টের স্বাভাবিক মুডের ছবি তোলার চেষ্টা
করুন।
98. নিজের তোলা ছবি প্রদর্শনী বা ওয়েবসাইটে
দেওয়ার আগে জেনে নিন কোন সাইজটি
সেখানকার জন্য প্রযোজ্য। আরজিন্যাল ছবির
কপি রিসাইজ করে সেখানে পাঠান।
99. এমনভাবে ছবি তুলবেন না যা দেখলে অসম্পূর্ণ
মনে হয়। ছবি এমন হওয়া উচিত যাতে দর্শক সব
তথ্য পেয়ে যায়।
100. গ্রাফিক্স প্রোগ্রামে ছবি এডিট করার পর
আলাদাভাবে সেভ করুন। পরে অডিট ছবিটি ভালো
না লাগলে আগের ছবিতে ফিরে যেতে পারবেন।
101. রঙিন ছবিকে সহজে সাদা-কালো করা যায়। তাই
ডিজিটাল ক্যামেরায় রঙিন ছবি তোলা উচিত।
102. ডিজিটাল ছবি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ছবি তোলার
স্থান, তারিখ ও উপলক্ষ ইত্যাদির সমন্বয়ে নতুন
ফোল্ডারের নাম দিন। তাতে পরে ছবি খুজেঁ বের
করতে সুবিধা হয়। ছবি অন্তত দুই জায়গায় সেভ
করুন – হার্ডডিস্ক ও সিডি বা ডিবিডিতে।
103. ভালো ফটোগ্রাফার হওয়ার শর্টকাট কোন রাস্তা
নেই। ধৈর্য্য, আগ্রহ ও চেষ্টার সমন্বয়েই সম্ভব
ভালো ছবি তোলা।
104. কোন ছবির সমালোচনা করার সময় ছবিটি ভালো
বা খারাপ হওয়ার কারণগুলোও বর্ণনা করুন।
105. নিজের তোলা ছবিগুলো আপনার চেয়ে বড়
ফটোগ্রাফারকে দেখান এবং তাদের সমালোচনা
গ্রহণ করুন।
106. সব ধরনের ছবিতে এক্সপার্ট হওয়া কঠিন ও
সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। ফটোগ্রাফির বিভিন্ন
শাখা-প্রশাখা থেকে আপনার সবচেয়ে পছন্দের
একটি শাখায় বেশি মনোযোগী হউন, তাতে কম
সময়ে ভালো ফলাফল পেতে পারেন।
107. ভুল-ভ্রান্তি থেকে শিক্ষা নিন। কোন ছবির ভুল-
ত্রুটিগুলো আবিষ্কার করার পর সম্ভব হলে একই
স্থানে গিয়ে আবার ছবি তুলুন।
108. ভালো ছবি তোলার জন্য সবসময় এক্সপেরিমেন্ট
করুন। ভালো ফটোগ্রাফারদের প্রসিদ্ধ ছবিগুলো
পর্যবেক্ষন করুন এবং ছবির কারিগরি ও শৈল্পিক
কলাকৈশল বোঝতে চেষ্টা করুন। ভালো
ফটোগ্রাফার হতে সময় লাগে।
109. উপসনালয়, সরকারী স্থাপনা ও সামরিক এলাকার
ছবি তোলার আগে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট
কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেবেন।
110. অন্য ফটোগ্রাফারের কোন স্টাইল হুবুহু কপি না
করে ছবিতে নিজস্ব স্বাতস্ত্র-বৈশিষ্ট্য আনার
চেষ্টা করুন।
111. সম্ভব হলে ক্যামেরাটি সব সময় সাথে রাখুন
(বিশেষ করে কমপ্যাক্ট ক্যামেরা যা সহজেই বহন
করা যায), ছবি তোলার একটি দূর্লভ মুহুর্ত যে
কোন সময় আসতে পারে।
112. ক্যামেরা সবসময় শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।
113. বিশেষ কোন প্রোগ্রাম বা অনুষ্ঠানে ছবি তোলার
সময় ব্যাটারি ও মেমোরি স্পেসের দিকে নজর
রাখুন। অনেক সময় শুরুতে অপ্রয়োজনীয় ছবি
তোলে ব্যাটারি শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে পরে আর
গুরুত্বপূর্ণ ছবি তোলা সম্ভব হয় না।
114. ছবি তোলার মুহুর্তগুলো উপভোগ করার চেষ্টা
করুন। তাহলে ফটোগ্রাফিতে একঘেঁয়েমি আসবে
না।
115. সম্ভব হলে একাধিক ফটোগ্রাফারের সাথে
নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন। তাদের পরামর্শ ও
অভিজ্ঞতা কাজে আসতে পারে।
116. ফটোগ্রাফিতে নিজেকে কখনও অন্যের তুলনায়
ভালো বা খারাপ কোনটিই মনে করবেন না।
117. ফটোগ্রাফিতে নিজস্ব একটি স্টাইল তৈরি করার
চেষ্টা করুন।
118. আপনার তোলা ছবিগুলো থেকে শ্রেষ্ট ১০০
ছবিকে আলাদা করে রাখুন। নতুন ভালো ছবি যোগ
করে একে নিয়মিত আপডেট করুন।
119. ভালো ছবি ভাগ্য ও বাই চান্সে হয় না, একে
ক্যামেরা দিয়ে ফটোগ্রাফার সৃষ্টি করে।
120. শুধু ক্যামেরা ভালো হলেই ছবি ভালো হয় না।
ভালো ছবির জন্য প্রয়োজন ক্যামেরার পিছনে
একজন দক্ষ মানুষ।
ভাল ফটোগ্রাফির টিপস ( Photography Basic Tips )
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment